মো. ওসমান গনি (ইলি), কক্সবাজার;

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ঝাউবন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চলমান পর্যটন মৌসুমে আগত পর্যটকদের টার্গেটকারী ডাকাত/ছিনতাইকারী চক্রের ০৪ সদস্যকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫। ১৪ নভেম্বর রাত ৩ টার সময় সুগন্ধা পয়েন্টের ঝাউবন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে। চলমান পর্যটন মৌসুম শুরু হওয়ার ফলে সারা দেশের ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আগমন করে। কক্সবাজার জেলার সদর থানাধীন সুগন্ধা পয়েন্টের ঝাউবন এলাকার একটি ছিনতাইকারী চক্র উক্ত পর্যটকদের টার্গেট করে সর্বস্ব ছিনতাই ও পর্যটকদের আটক করে মুক্তিপণ আদায়সহ নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করছে মর্মে তথ্য পায় র‍্যাব-১৫। উক্ত তথ্যের আলোকে গত ০৮ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে সুগন্ধা পয়েন্টের ঝাউবন এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ০৬ জন ছিনতাইকারী’কে গ্রেফতারপূর্বক থানায় সোপর্দ করে র‌্যাব-১৫।

কক্সবাজার জেলার সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় একটি ছিনতাইকারী চক্র আবারও সক্রিয় হয়ে পর্যটকদের ছিনতাই ও জিম্মি করে টাকা আদায় সংক্রান্ত মর্মে তথ্য পায় র‍্যাবের একটি গোয়েন্দা দল। উক্ত তথ্যের সত্যতা যাচাই ও ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারপূর্বক আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে র‌্যাব-১৫ এর একটি গোয়েন্দা দল ব্যাপক তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাবের অভিযানিক দল গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, কক্সবাজার জেলার সদর থানাধীন কক্সবাজার পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকার হোটেল প্যারাডাইস প্রসাদ এর বিপরীত পাশের ঝাউবাগান ভিতর একটি ডাকাত/ছিনতাইকারী দল ডাকাতি সংঘটনের উদ্দেশ্যে সমবেত হয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।

উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে অদ্য ১৪ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ রাত অনুমান ০৩.০০ ঘটিকার সময় র‌্যাব-১৫, সিপিএসসি ক্যাম্পের একটি চৌকস অভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ডাকাত চক্রটি র‌্যাবের অভিযানিক দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ দিগ্‌বিদিক দৌড়ে ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টাকালে চক্রের ০৪ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং তাদের ২/৩ জন সহযোগী কৌশলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত ডাকাত চক্রের হেফাজত হতে ০৪টি ছুরি, ০২টি স্মার্ট ফোন, ১টি বাটন ফোন, ০১টি হাত ঘড়ি, নগদ ৩,১৬৫/- (তিন হাজার একশত পঁয়ষট্টি টাকা) উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার কৃত ডাকাত চক্রের সদস্য মো. ওমর ফারুক (১৯), পিতা-মোঃ যকির, মাতা-খালেদা বেগম, সাং-সমিতি পাড়া, ০১নং ওয়ার্ড, কক্সবাজার পৌরসভা।
মো. আবুল হোসাইন (১৯), পিতা-মোঃ নুরুল বশর, মাতা-হাজেরা খাতুন, সাং-মধ্যম নুনিয়ারছড়া, ০২নং ওয়ার্ড, কক্সবাজার পৌরসভা। মো. মোবারক উল্ল্যা (২৪), পিতা-কালামিয়া, মাতা-আমেনা খাতুন, সাং-খুরুশকুল, উত্তর মামুন পাড়া, ০৫নং ওয়ার্ড, খুরুশকুল ইউনিয়ন। মো. শাহজাহান (২২), পিতা-মৃত মদন আলী, মাতা-মসুরা খাতুন, সাং-খুরুলিয়া, মাষ্টারপাড়া, ০৪নং ওয়ার্ড, ঝিলংজা ইউনিয়ন, সর্ব থানা- কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজার।

চলমান পর্যটন মৌসুম উপলক্ষ্যে কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের টার্গেট করে সুযোগ বুঝে তাদের কাছ থেকে মোবাইল, টাকা এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়।

এছাড়াও বিভিন্ন সময় পর্যটকদের আটকে রেখে পরিবারের কাছে বিশাল অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করতো বলেও তারা স্বীকার করে। উদ্ধারকৃত আলামতসহ গ্রেফতারকৃত ডাকাত চক্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণার্থে কক্সবাজার জেলার সদর মডেল থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে।

র‌্যাব-১৫ দায়িত্বাধীন এলাকা কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় বিরাজমান নানাবিধ অপরাধ দমনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দায়িত্বাধীন কক্সবাজার জেলায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই এর সাথে জড়িত চক্রগুলোকে আইনের আওতায় নিয়ে আসাসহ পর্যটন নগরীতে আগত দেশি-বিদেশি পর্যটক ও স্থানীয় জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করতে সার্বক্ষণিকভাবে র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।